Thursday, October 27, 2016

কবি ও কবিতা...................মায়ের আগমন পদধ্বনি (আগমনী)

মায়ের আগমন পদধ্বনি (আগমনী)


বাতাসে শিহরণ পুলকিত অবনী,
আসিছেন মহাকালী জগত জননী।
পদভারে ধরাধামে কাঁপিছে মেদিনী
আসিছেন উগ্রচণ্ডা কালী করালিনী।

আদ্যাশক্তি মহামায়া ভীমা ভয়ঙ্করী
ত্রিশূল ধারিণী কালী চণ্ডিকা শঙ্করী
কৃষ্ণপক্ষে অমাবস্যা ঘোর রজনীতে,
শ্যামাকালী চতুর্ভূজা পূজে বিধিমতে।

অমাবস্যা রজনীতে হয় কালীপূজা,
নৃমূণ্ডমালিনী দেবী শ্যামা চতুর্ভূজা।
ছিন্নমস্তা মা চামুণ্ডা মুণ্ডমালা গলে,
দেবী চণ্ডিকা কালী খড়্গ করতলে।

অর্ঘ সাজায়েছি মা ব্যথা ভরা নয়নজলে,
ডাকি মাগো বারে বারে এসো ধরাতলে।

কবি ও কবিতা..............তেলবাজি

তেলবাজি

চারিদিকে চলছে দেখো
তেলের ছড়াছড়ি,
তেলের পথে কেমন সবে
খাচ্ছে গড়াগড়ি।
.
কেউবা মাজে খাঁটি সর্ষে
গুরুর চরণদেশে,
গুরু দেবের আশীর্বাদে
কাটবে জীবন হেসে।
.
অফিস পাড়ায় তেলাতেলি
নিত্য দিনের সূচী,
প্রমোশনটা আগে হবে
করলে কদমবুচি।
.
রাজনীতিতে তৈল মর্দন
চলছে দিবানিশি,
পাতিনেতার কপাল খুলে
থাকলে তেলের শিশি।
.
গাড়ি বাড়ি মিলে সবি
নেতার আশীর্বাদে,
খুন খারাবি মাফ হয়ে যায়
নেতার সিলটা কাঁধে।
.
থাকে যদি তেলের হাড়ি
ঘরের বউয়ে খুশি,
তেল মালিশের উপকারটা
তাইত মনে পুষি।
.
তেল মবিলে ভালো চলে
গাড়ির ইঞ্জিন চাকা,
তেলে চলে সমাজ সংসার
তাছাড়া সব ফাঁকা।
.
সত্য কথায় সাধু বেজার
নাইবা বলুক মুখে,
রপ্ত কর তেলবাজিটা
কাটবে জীবন সুখে।।

Wednesday, October 26, 2016

পূজোর মেলায়

পূজোর মেলায়

সাঁঝের বেলায় পূজোর মেলায়
চলিছে সার্কাস খেলা,
মেলার ভিড়ে বন্ বন্ করে
ঘুরিছে নাগর দোলা।

মেলার মাঝে মাইক বাজে
ভেসে আসে কোলাহল,
দোকানীরা সব করে কলরব
করে হৈ চৈ অবিরল।

পূজোর পরে দশ দিন ধরে
রোজ বসে পূজোর মেলা,
পূজোর মেলাতে বসে গ্যালারিতে
দেখে সবে যাদুর খেলা।

ম্যাজিক শো-এর, চেয়ে বেশি ঢের
ভিড় হয় পুতুল নাচে,
মেলার ভিড়, তার চেয়েও ভিড়
হরেক মালের কাছে।

ক্রমে অবশেষে রাত হয়ে আসে
ভিড কমে ধীরে ধীরে,
ভেঙে যায় মেলা ফিরিবার পালা,
ঘরে যায় সবে ফিরে।

Tuesday, October 25, 2016

কালী কপালিনী (দেবী স্তুতি)

কালী কপালিনী (দেবী স্তুতি)
(শংখধ্বনি ও ঢাকের বাদ্য সহ কাঁসর-ঘন্টাধ্বনি)
(গীত)
ঔঁ জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী
দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোহস্তুতে।
ঔঁ কালী কালী মহা কালী কালিকে পাপনাশিনী
সুধা তমক্ষরে দেবী কালিকায়ৈ নমোহস্তুতে।
(স্তোত্র)
কোথা তুমি শঙ্খ চক্র গদা খড়্গধারিণী
ত্রিশূলধারিণী কালী কপালিনী মা ছিন্নমস্তা-
তুমি ওঠো – তুমি জাগো-
জাগো মা-
তুমি নেমে এস এই ধরায় পুনর্বার,
বাজাও তোমার প্রণববিষাণ মহা হুংকারে
মিলে যাক মিশে যাক অনাচার অবিচার
অধর্মের আছে যত ব্যভিচার।
সৃষ্টি হোক নতুন এক ধর্ম,
নতুন এক যুগ, নতুন এক শক্তি।
শক্তি দাও মা, ভক্তি দাও মা।
আদ্যাশক্তি মহামায়া,
কখনো দশভূজা, কখনো অষ্টভূজা
কখনো বা চতুর্ভূজা শ্যামা কালী রুপে
তিনি জগতে বিরাজমানা।
তার আবির্ভাবে পৃথিবী হয় প্রাণময়ী।
তুমি জাগো জাগো মা,
তুমি না জাগলে সন্তানকূল ঘুমিয়ে পড়বে।
সন্তানকে অভয় দাও মা আদ্যাশক্তি মহামায়া।
(গীত)
জাগো তুমি জাগো–
জাগো কালী করালিনী ভীমা ভয়ংকরী
চণ্ডিকা শংকরী জাগো—
ত্রিশূলধারণী নৃমুণ্ডমালিনী
কালী করালিনী দানবদলনী।
চণ্ডিকা শংকরী, ভীমা ভয়ংকরী
কালী কপালিনী
শক্তি প্রদায়িণী
জগন্ময়ী মা তুমি জাগো-
জাগো কালী করালিনী ভীমা ভয়ংকরী
চণ্ডিকা শংকরী জাগো—
তুমি জা—-গো——-
(স্তোত্র)
নমো দেবৈঃ মহা দেবৈঃ শিবায়ৈ সততং নমঃ
নমঃ প্রকৃতায়ৈ ভদ্রায়ৈ নিয়তাঃ প্রণতাস্ম তাম।
রৌদ্রায়ৈ নমঃ নিত্যায়ৈ গৌর্যৈ ধাত্রৈ নমো নমঃ
জ্যৌত্স্নায়ৈ চেন্দুরুপিন্যৈ সুখায়ৈ সততং নমঃ
ঔঁ হ্রীং ক্র্রীং ক্লীং কালিকা দেব্যৈ নমঃ।
জয় ত্বং দেবি চামুণ্ডে জয় ভূতাপহারিণী,
জয় সর্বগতে দেবি কালরাত্রি নমোহস্তুতে।

ঔ দ্বৌ শান্তিঃ অন্তরীক্ষং শান্তিঃ পৃথিবীং শান্তিঃ
শান্তিরাপ শান্তি রোষধয় শান্তিঃ বনস্পতয়
শান্তিঃ সামা শান্তিরেধি
ঔঁ আপদং শান্তিঃ যত্র এবাগত পাপং
তত্রৈব প্রতিগচ্ছতু।
ঔঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ

আসিছে দীপাবলী

আসিছে দীপাবলী

কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ হাসিছে গগনেতে,
বৈরাগীর গীত শুনি রজনী প্রভাতে।
বিছানায় আছি শুয়ে মেলিয়া নয়ন,
চাষী সব যায় মাঠে হরষিত মন।

দীপাবলীর আনন্দে মাতিছে ভুবন,
বিশ্বমাঝে শুনি কার আকুল ক্রন্দন।
ক্ষুধাতুর শিশু কাঁদে পড়িয়া ধূলায়,
কৃষকের ঘরে আজ অন্ন কেন নাই?

নরাসুরে ছেয়ে আছে এ মহীমণ্ডল,
মার আঁখি ছলছল নয়নেতে জল।
নরাসুর বধে দেবী এসো মাগো ত্বরা,
করিয়া অসুরে বধ, মুক্ত কর ধরা।

মার অভিষেক হয় নয়নের জলে,
বর্ষে বর্ষে মা আসেন এই ধরাতলে

Monday, October 24, 2016

শিউলির গাছে ফুল ফোটে

শিউলির গাছে ফুল ফোটে

শিউলির গাছে ফুল ফোটে রাশি রাশি,
ধানখেতে সোনারোদ ঝরে হাসি হাসি।
শরতের সাদা মেঘ সুনীল গগনে
সারাদিন করে খেলা আপনার মনে।

সকালে সোনার রবি কিরণ ছড়ায়,
সাদা বক আসে উড়ে নদী কিনারায়।
দুইধারে নদীকূলে কাশ ফুল ফোটে
নদীঘাটে যাত্রীদের কোলাহল ওঠে।

দিঘিতে শালুক পদ্ম ফুটেছে প্রভাতে,
পাখি সব গায় গীত তরুর শাখাতে।
গোয়ালা পাড়ার মাঠে চরে গরুপাল,
বাজায় বাঁশের বাঁশি গাঁয়ের রাখাল।

শিউলির ফুল ফোটে ছড়ায় সুবাস,
ভাসিছে পূজোর গন্ধ নির্মল আকাশ।

Sunday, October 23, 2016

রূপসী বাংলা

রূপসী বাংলা

পৃথিবীর সকল দেশের সেরা আর সুন্দর আমাদের এই দেশ,
ষোলকোটি সন্তানের বসবাস তাঁর বুকে আনন্দের নেই শেষ ।
অনেক জয় এবং গৌরবের ইতিহাস রয়ে গেছেযে তাঁর বুকে,
একুশে ফেব্রুয়ারী এবং স্বাধীনতাকে স্মরণ করি মনের সুখে ।
কতযে মনোরম এই দেশটি তাঁর রুপের বাহারের নেই অন্ত,
তাঁকে সদা ঘিরে রয়েছে গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত শীত ও বসন্ত ।
তাঁর বুকেতে নিরবধি কতযে নদ-নদী সদা করছে জড়াজড়ি,
পদ্মা মেঘনা যমুনা ব্রহ্মপুত্র শীতলক্ষ্যা বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী ।
জাতীয় ফুল শাপলা এই দেশের সব গ্রামের পুকুরেতে ভাসে,
জাতীয় ফল কাঁঠালের গন্ধও আকাশে বাতাসে ভেসে আসে ।
এই রূপসী বাংলার সোনার মাটিতেযে সোনার ফসলই ফলে,
মেহনতি মানুষের কৃষিকাজ হয় নির্বাহ তাঁর স্থলে আর জলে ।
গ্রামে পলাশ আর শিমুল শাখে বসে ভোরের পাখি গান গায়,
সূর্যোদয়ের আগে কৃষকেরা হাল লয়ে কাঁধে মাঠে মাঠে যায় ।
গরু চড়ায় রাখাল বন্ধুরা বাজায় বাঁশি বসে দূর কোন মাঠে,
দূর ও দূরান্ত হতে মানুষদের সমাগম হয় বাজারে আর হাঁটে ।
এই বাংলার রুপ এতই মনোমুগ্ধকর কোন তুলনা নেই যার,
জননী সম অতি প্রিয় সেযে মানুষের অন্তরের ভালোবাসার ।
চিরটাকাল রূপসী বাংলাকে ভালোবেসে রেখে যাব তাঁর মান,
কখনও নষ্ট হতে দেবনা যতদিন বাঁচব একটিও তাঁর সন্তান ।
সোনার বাংলাদেশ রুপে ও গুনে চির সবুজ যেন চির উর্বশী,
সুশীতল ছায়া ঘেরা মায়া ভরা সোনার রুপে সে অতি রূপসী ।
আমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা তাঁর প্রতি হবে না কোনদিন শেষ,
স্বযত্নে লালিত আমার হৃদয়ে প্রিয় রূপসী সোনার বাংলাদেশ ।

কবি ও কবিতা

আমি তো দেখিনি
তোমার চোখের তারায় ভাসিছে নীল পদ্ম,
আমি তো শুনিনি
তোমার হৃদয়ে বাজিছে প্রেমের কোন শব্দ ।
ভালবাসা কি শুধু
জেগে রয় আর কথা কয় তোমার ঐ ঠোঁটে?
ভালবাসাতো জানি
হয় উদ্ভাসিত হৃদয়ের গভীর অতলে ফোঁটে ।
মোর প্রানের মর্মরে
তোমার প্রেমের বর্ষণ সারাক্ষন ঝরে অঝরে,
তোমায় ভাল লাগার
নির্ঝাসে আমার প্রাণের সবটুকুই উঠে ভরে ।
প্রেমেতে বেঁহুশ আমি
আঁখিতে শুধু তোমার ছায়া যেচে রয় নিত্য,
আজিকে রিক্ত নিঃস্ব
আমি দুয়ারে দাঁড়িয়ে তোমার প্রেমের ভৃত্য ।

কবি ও কবিতা

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা মহা ধূমধাম,
মা লক্ষ্মীর চরণেতে জানাই প্রণাম।
বিষ্ণুর বনিতা তুমি রূপে অনুপমা,
বিশ্বজুড়ে হেরি তব অমর মহিমা।

শোভিছে মঙ্গলঘট তাহে আম্রশাখা,
চৌদিকে সুদৃশ্য বহু আলপনা আঁকা।
ধূপ দীপ শঙ্খ ঘণ্টা প্রসাদের থালা,
সুগন্ধি চন্দন আর পত্র পুষ্প মালা।

শুক্ল পূর্ণিমা তিথিতে দেবীর পূজন,
পুরোহিত মন্ত্র পড়ে হয়ে একমন।
পূজান্তে পাঁচালিপাঠ ভক্তিযুক্ত মনে,
খিচুড়ি প্রসাদ ভোগ খায় সর্বজনে।

করি আরাধনা আমি ভক্তিসহকারে,
অন্ন দেহ ধন দেহ জননী আমারে।

কবি ও কবিতা সময়ের শ্রেষ্ঠ কবিদের আসর

কার্তিকের ধানের খেতে. 

কার্তিকের ধানের খেতে ভোরে হিমেল হাওয়া,
সবুজ তরুর শাখে শাখে পাখিদের গান গাওয়া।
খেতের আলে ফিঙে নাচে দেখতে ভালো লাগে,
উথলে ওঠে খুশির জোয়ার চিত্তে পুলক জাগে।

কার্তিকের ঐ ধানের খেতে উপচে পড়ে হাসি,
মাথায় বোঝাই ধানের আঁটি যাচ্ছে গাঁয়ের চাষী।
কার্তিকের ঐ ধানের খেতে সোনার ধান পাকে,
উত্তরে বয় হিমেল হাওয়া অজয় নদের বাঁকে।

শিশির ধোওয়া ঘাসের উপর সোনালি রোদ ঝরে,
বাউরী পাড়ায় মুরগীরা ডাকে পরাণ পাগল করে।
দিনশেষে পড়ে বেলা সূর্য ডোবে নদীর কিনারায়,
সাঁঝের আঁধার আসে নেমে প্রদীপ জ্বলে সন্ধ্যায়।

আকাশ জুড়ে তারা ফোটে, চাঁদ ওঠে আকাশে,
ধীরে ধীরে রাত কেটে যায়, সকাল হয়ে আসে।

কবি ও কবিতা.........................মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা বাঁধে প্রীতির বাসা,
মাটির ঘর স্বর্গের সমান মনে জাগে নব আশা।
মাটির ঘরে স্বর্গসুখ এমন সুখ কোথা গেলে পাই?
প্রীতিপ্রেমের পূণ্যবাঁধনে মিলেমিশে থাকি সবাই।

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা কাক বসে খড়ো চালে,
দোয়েল ফিঙে নেচে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে।
সুশীতল বাতাস বয় বিহগেরা সব করে কলতান,
রাখালিয়া সুরে বাজে বাঁশি ভরে ওঠে মনও প্রাণ।

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা উঠোন ভরা সবুজ ঘাস,
ঘরে আছে মাটির ভালবাসা সুখে থাকি বারোমাস।
মাটির ঘরে মাটির প্রদীপ জ্বলে ওঠে প্রতি সন্ধ্যায়,
মন্দিরে বাজে পূজোর ঘন্টা  ঢাকীরা ঢাক বাজায়।

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা চাঁদের আলোক ঝরে,
মাটির পরশে সুখের ছোঁয়া হেথা চিত্ত ওঠে ভরে।

Saturday, October 22, 2016

কবি ও কবিতা......................আমার গাঁয়ে আঁকা বাঁকা পথে

আমার গাঁয়ে আঁকা বাঁকা পথে

আমার গাঁয়ে আঁকা বাঁকা পথে,
গাঁয়ের বধূরা আসে জল নিতে।
কলসী কাঁখে আলতা পরা পায়ে,
রাঙাপাড় কাঁচা হলুদ শাড়ী গায়ে।

আমার গাঁয়ে রাঙা মাটির পথে,
দুধার ভরা সবুজ ধানের খেতে।
সোনা রোদ হাসে মেঘের কোলে,
শালুক পদ্ম ফোটে দিঘির জলে।

আমার গাঁয়ের সরু গলি পথে,
মুরগীগুলো ধান খায় খুঁটে খুঁটে।
শালিক বসে বাঁশগাছের ঝাড়ে,
কুকুরগুলো হাঁকে পুকুরপাড়ে।

আমার গাঁয়ে রাঙা রাস্তার ধারে,
শঙ্খচিল ডাকে আকাশের পারে।
সাড়ে আটটায় আসে রেলগাড়ি,
চলে যায় দূরে গ্রামসীমানা ছাড়ি।

আমার গাঁয়ের চৌমাথার মোড়ে,
বাস থামে যাত্রীরা আসে দৌড়ে।
সেথা আছে দীনুর চায়ের দোকান,
সকলেই চা খায়, পরে খায় পান।

আমার গাঁয়ে সরু আঁকাবাঁকা পথে,
আনাগোনা শুরু হয় সকাল হতে,
সকাল বিকাল চলে গোরুর গাড়ি,
দূরে আকাশে বক ওড়ে সারি সারি।

সাঁঝের আঁধার নামে গাঁয়ের পথে,
ধূপ দীপ জ্বলে, শাঁখ বেজে ওঠে।
আকাশে চাঁদ উঠে, তারারা ফোটে,
জোছনা ঝরে সুনীল আকাশ হতে।

কবি ও কবিতা........................পথের দুধারে ধান খেত

পথের দুধারে ধান খেত

পথের দুধারে ধানখেত আর তাল খেজুরের সারি,
রাঙাধূলো উড়িয়ে পথে সারাদিন চলে গরুর গাড়ি।
দূরে ওই আকাশপারে শুনি আমি শঙ্খ চিলের ডাক,
অজয়নদের পথের বাঁকে উড়ে বন শালিকের ঝাঁক।

বনের টিয়া লুকায় এসে সবুজ ধান খেতের আলে,
বীর হনুমান বসে থাকে ঐ উঁচু গাছের লম্বা ডালে।
ময়না শালিক ঝগড়া করে বট অশ্বত্থ তরুর শাখে,
পথের দুধারে বাঁশের ঝোপে মুরগীরা রোজ  ডাকে।

দিঘির জলে মরাল-মরালী ভাসে সাঁতার কাটে খুব,
পানকৌডি ঊড়ে এসে হেথা দিঘির জলে দেয় ডুব।
গাঁয়ের বধূরা কলসী কাঁখে জল নিতে আসে ঘাটে,
মাঠে মাঠে সোনার ফসল ফলে সোনা ডাঙার মাঠে।

দিবসের শেষে সূর্য অস্ত যায় নামে সাঁঝের আঁধার,
রাতের বেলা চাঁদের আলোয় আলোকিত চারিধার

কবি ও কবিতা....................মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা বাঁধে প্রীতির বাসা,
মাটির ঘর স্বর্গের সমান মনে জাগে নব আশা।
মাটির ঘরে স্বর্গসুখ এমন সুখ কোথা গেলে পাই?
প্রীতিপ্রেমের পূণ্যবাঁধনে মিলেমিশে থাকি সবাই।

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা কাক বসে খড়ো চালে,
দোয়েল ফিঙে নেচে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে।
সুশীতল বাতাস বয় বিহগেরা সব করে কলতান,
রাখালিয়া সুরে বাজে বাঁশি ভরে ওঠে মনও প্রাণ।

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা উঠোন ভরা সবুজ ঘাস,
ঘরে আছে মাটির ভালবাসা সুখে থাকি বারোমাস।
মাটির ঘরে মাটির প্রদীপ জ্বলে ওঠে প্রতি সন্ধ্যায়,
মন্দিরে বাজে পূজোর ঘন্টা  ঢাকীরা ঢাক বাজায়।

মাটির ঘরে শান্তির ঠিকানা চাঁদের আলোক ঝরে,
মাটির পরশে সুখের ছোঁয়া হেথা চিত্ত ওঠে ভরে।

কবি ও কবিতা....................রাঙা মাটির পথ চলেছে

রাঙা মাটির পথ চলেছে

রাঙা মাটির পথ চলেছে আমার গাঁয়ের পাশে,
দুধার ভরা ধান খেত আর চিল ওড়ে আকাশে।
বুড়ো শিবের গাজনতলায় গ্রাম সড়কের মোড়ে,
রোজ আসে যাত্রীবাহী বাস যাত্রীদল সব চড়ে।

আমার গাঁয়ে পথের বাঁকে গোরু বাছুর চরে,
মেঠো সুরে বাজে বাঁশি পরাণ পাগল করে।
মন মাতানো বাঁশির সুরে মেতে ওঠে প্রাণ,
একতারাতে মেঠো পথে গাইছে কেহ গান।

নদীর ঘাটে বটের গাছে পাখিরা বাঁধে বাসা,
কলসী কাঁখে বধূদের রোজ জল নিতে আসা
নদীর ঘাটে নৌকা বাঁধা নাইকো কূলে কেউ,
নদীর চরে কুকুরগুলো ডাক ছাড়ে ঘেউঘেউ।

নদী কিনারায় সূয্যি ডুবে যায় চাঁদ ওঠে আকাশে,
রাতের বেলায় জোছনার রাশি নদীর জলে হাসে।

** সকলে comment এ মত জানান আমি দিন একটি করে কবিতা দেব।************